অপারেশন ডেভিল হান্ট: বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বিগ্ন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সম্প্রতি বাংলাদেশে 'অপারেশন ডেভিল হান্ট' নামে নিরাপত্তা ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি রাজনৈতিক সহিংসতা মোকাবিলায় আইনের শাসন ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, দীর্ঘদিনের দমন-পীড়নে বাংলাদেশে রাজনৈতিক মেরুকরণ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে বিষয়ে বর্তমান কর্তৃপক্ষের সতর্ক থাকা উচিত। জাতিসংঘের পরামর্শ অনুযায়ী, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জরুরি সংস্কারের দিকে সরকারের মনোযোগ দেওয়া উচিত। 
'অপারেশন ডেভিল হান্ট' অভিযানে ইতোমধ্যে প্রায় ৩,৯২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থক। এইচআরডব্লিউ বলেছে, যেকোনো মতাদর্শের মানুষের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা মৌলিক মানবাধিকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত এ অধিকারকে সুরক্ষা দেওয়া এবং বলপ্রয়োগের আগে সর্বোচ্চ শান্তিপূর্ণ উপায় প্রয়োগ করা। 

এছাড়া, চুয়াডাঙ্গা জেলায় 'অপারেশন ডেভিল হান্ট' অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পাঁচ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জেলার চারটি থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

এই পরিস্থিতিতে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন নিরাপত্তা বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করে এবং রাজনৈতিক সহিংসতা দমনে আইনের শাসন মেনে চলে।

এদিকে, 'অপারেশন ডেভিল হান্ট' অভিযানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে অযথা হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা প্রমাণ ছাড়াই তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করছে।

এ বিষয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা নিরপেক্ষ ও পেশাদারিত্বের সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে, যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, "অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা। যদি কোনো সদস্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

সাধারণ জনগণও আশা প্রকাশ করেছে যে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কার্যক্রমে আরও সতর্কতা ও সংবেদনশীলতা প্রদর্শন করবে, যাতে নিরপরাধ মানুষ হয়রানির শিকার না হয় এবং প্রকৃত অপরাধীরা আইনের আওতায় আসে।

এ বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য, নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন:

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url