গভর্নর আহসান এইচ মনসুর–এর কন্যার কাচের ঘরের বিলাসী জীবন: দুদকের নীরবতা।

মেহরিনের বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে গণমাধ্যম নীরব কেন? সরকারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন

বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে যখন সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি ও সুদের হার নিয়ে দিশেহারা, তখনই নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানের কন্যা মেহরিনের বিলাসী জীবনযাপন। প্রশ্ন উঠছে—গণমাধ্যম কেন এই বিষয়ে নিশ্চুপ? গণমাধ্যম কি অন্তর্বর্তী সরকারের চাপে এই তথ্য উপেক্ষা করছে?
বিশ্ব অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বাজারেও। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ যখন প্রতিনিয়ত ব্যয়ের ভারে জর্জরিত, তখন দেশের নীতিনির্ধারকদের পরিবারের সদস্যদের এমন বিলাসবহুল জীবনযাপন কতটা গ্রহণযোগ্য?

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিমুখী অবস্থানকে স্পষ্ট করে তুলছে। একদিকে তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ‘শুদ্ধি অভিযান’ পরিচালনার কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেদের স্বজনদের বিষয়ে নীরব ভূমিকা নিচ্ছে। এই নীরবতাই নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে—শুধু সাধারণ জনগণ ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেই কি শুদ্ধি অভিযান? নাকি সরকার নিজের অভ্যন্তরীণ গাফিলতি আড়াল করতে চাইছে?

এই বিতর্ক আরও গভীর হচ্ছে, কারণ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম এ বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যখন এই নিয়ে আলোচনা বাড়ছে, তখনও মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরছে না। এতে অনেকেই মনে করছেন, গণমাধ্যম সরকার বা প্রভাবশালী মহলের চাপের মুখে এই ইস্যুতে নিশ্চুপ রয়েছে।

এদিকে, অর্থনৈতিক সংকটের দায় সরকার বিভিন্ন বাহ্যিক কারণে চাপানোর চেষ্টা করলেও, নিজেদের অভ্যন্তরীণ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির বিষয়ে কি তারা যথেষ্ট আন্তরিক? অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য শুধু নীতি পরিবর্তনই যথেষ্ট নয়, নীতিনির্ধারকদের ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনেও স্বচ্ছতা থাকা জরুরি।

সরকার কি সত্যিই দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে প্রস্তুত? নাকি এটি শুধুই রাজনৈতিক বক্তব্য? জনগণের সামনে এখন এটিই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url