ইলন মাস্কের টুইটে--শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ছক ফাঁস: মার্কিন সংবাদমাধ্যমের চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন

ইউরো বাংলা খবর ডেস্ক |

মার্কিন অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য গ্রে জোন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা ও তৎপরতা চালিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে ২০১৮ সাল থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট’ (আইআরআই)-এর মাধ্যমে বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।


প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারায় আইআরআই কৌশল পরিবর্তন করে তরুণদের সংগঠিত করতে শুরু করে। সংগীতশিল্পী, পারফর্মার এমনকি ‘এলজিবিটিকিউ’ গোষ্ঠীর কর্মীদেরও ব্যবহার করা হয়।

‘ক্ষমতা পরিবর্তনের’ নীলনকশা

দ্য গ্রে জোনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, শেখ হাসিনার সরকারকে দুর্বল করতে এবং ‘অস্থিতিশীলতা’ তৈরি করতে আইআরআই দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছে। একপর্যায়ে তারা শহুরে যুবকদের মধ্যে ‘শাসন পরিবর্তনের নেটওয়ার্ক’ গড়ে তোলে।

নথিপত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বিএনপি। কিন্তু দলটির জনপ্রিয়তার অভাব ও অকার্যকর রাজনীতির কারণে নতুন কৌশল নেওয়া হয়। তরুণদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার ও সরকারবিরোধী বার্তা ছড়ানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পেছনে ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেরও ভূমিকা ছিল।

সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও মার্কিন অর্থায়ন

দ্য গ্রে জোনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারবিরোধী মনোভাব গড়ে তুলতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাংলাদেশি হিপ-হপ শিল্পীদের অর্থায়ন, রাজনৈতিক বার্তাসংবলিত মিউজিক ভিডিও তৈরি এবং ‘হিজড়া নৃত্য পারফরম্যান্স’-এর মতো কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা ছিল।

প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, ২০২০ সালে আইআরআই অর্থায়নে ‘তুই পারিস’ নামে একটি হিপ-হপ মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করা হয়, যা যুবসমাজকে ‘রাস্তার আন্দোলনের’ প্রতি উৎসাহিত করেছিল।

শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন?

দ্য গ্রে জোনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কয়েক মাসের সহিংস আন্দোলনের পর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা হয় এবং সামরিক বাহিনী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনাকে হেলিকপ্টারে করে ভারতে চলে যেতে দেখা যায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, প্রতিবেদন অনুযায়ী, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস পরবর্তী সরকার গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি বিক্ষোভকে ‘সুপরিকল্পিত’ বলে প্রশংসা করেন।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

দ্য গ্রে জোনের এই প্রতিবেদন নিয়ে বাংলাদেশে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে।

নিউজ লিঙ্ক দেখুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url