আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং টেলিফোনে যুক্ত ছিলেন শেখ হাসিনা।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার প্রায় ছয় মাস পর, আওয়ামী লীগ ভারতে অবস্থানরত নেতাদের নিয়ে কলকাতায় একটি বৈঠক করেছে। সভায় দলের সভাপতি শেখ হাসিনা টেলিফোনের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন। বৈঠকে ১৮ দিনের একটি ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে লিফলেট বিতরণ, প্রতিবাদ মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ, অবরোধ এবং হরতাল। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা। 
কর্মসূচির মধ্যে আজ শনিবার থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত সারা দেশে জনমত গড়ে তুলতে লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ পালন করা হবে। মাঝে তিন দিন বিরতি দিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ পালিত হবে। এর পরের সপ্তাহে অবরোধ ও হরতাল ডাকা হয়েছে। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ কর্মসূচি ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতাল পালন করবে আওয়ামী লীগ। 

এদিকে, আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঠেকানোর প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম আওয়ামী লীগকে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগকে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না'। 

দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নেতারা আওয়ামী লীগের সামনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মামলার প্রকোপ তুলনামূলক কিছুটা কমলেও, ভয় কাটেনি। এমন পরিস্থিতিতে কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে মাঠে হামলা ও মামলার ঝুঁকি দুটোই থাকছে। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, 'আওয়ামী লীগ যুগে যুগে গড়ে ওঠা দল। এই দল একদিনে বড় হয়নি। কোটি কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে হৃদয়ে ধারণ করে। হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন আওয়ামী লীগ করবে।' 

এছাড়া, আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এত বড় দল, এটার 'ফাংশন' লাগবে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। কর্মীদের উজ্জীবিত করতে হবে, মাঠে ফিরতে হবে। গণতন্ত্র চর্চায় এমন কর্মসূচির বিকল্প নেই। 

আওয়ামী লীগের অভিযোগ, তৃণমূল পর্যায়ের কয়েক শ' সাবেক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে ছাত্ররা যোগাযোগ করছেন। তারা যে দলটি করবেন সেখানে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তারা যুক্ত করতে চান। এটিও দল ভাঙ্গার একটি কৌশল হিসেবে কাজ করছে। 

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও দলের অন্যান্য নেতারা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ভারতে পাড়ি জমান। বর্তমানে তারা কলকাতায় অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url