ড. ইউনুসের পদত্যাগ নিয়ে বিতর্ক।


Euro Bangla Khobor ডেস্ক রিপোর্ট | ৪ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশ-বিদেশে আলোচনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে যে, বর্তমান মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা তুলসী গ্যাবার্ড নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ১০ মার্চের মধ্যে পদত্যাগ করতে বলেছেন। কারণ, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র প্রকাশিত হয়নি এবং তিনি এখনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তুলসী গ্যাবার্ডের অবস্থান ও মার্কিন হস্তক্ষেপের প্রশ্ন

সাম্প্রতিক এই দাবি ঘিরে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, আসলেই কী তুলসী গ্যাবার্ড এমন কোনো নির্দেশ দিয়েছেন? গ্যাবার্ড বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তবে বাংলাদেশ ইস্যুতে তার আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।

শেখ হাসিনার পদত্যাগ না থাকায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন

যেহেতু শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র প্রকাশিত হয়নি, তাই তিনি এখনও বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী। সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কোনো প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করা সাংবিধানিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার পরিচালনায় ফিরতে চাইলে উপদেষ্টা পরিষদের বৈধতা নিয়ে বিতর্ক আরও ঘনীভূত হবে।

ভারতের সামরিক প্রস্তুতি ও বাংলাদেশে শান্তিরক্ষা মিশনের সম্ভাবনা

বিভিন্ন সূত্রের দাবি, ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে সমরাস্ত্র মজুদ করছে এবং ১৮-১৯ মার্চের মধ্যে তারা বাংলাদেশে সামরিক হস্তক্ষেপ করতে পারে। যদিও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে এই ধরনের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় যদি বাংলাদেশে কোনো বাহিনী প্রবেশ করে, তবে তা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য বড় হুমকি হতে পারে। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, ফলে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে।

ড. ইউনুস: দেশপ্রেমিক না দুষ্কৃতকারী?

এমন সংকটপূর্ণ অবস্থায় ড. ইউনুসের ভূমিকা নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। কেউ বলছেন, তিনি বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করছেন, আবার কেউ মনে করছেন, তিনি একটি ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে উঠেছেন। কেউ কেউ বলছেন, যদি তিনি সত্যিকার দেশপ্রেমিক হন, তবে দেশের স্বার্থে পদত্যাগ করা উচিত। অন্যথায়, বাংলাদেশ ইউক্রেনের মতো ধ্বংসের পথে এগোতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফর ও কূটনৈতিক প্রভাব

আগামী ১৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত সফর করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, ভারত-আমেরিকার মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে এবং ভারতীয় পদক্ষেপের প্রতি ট্রাম্পের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।

বাংলাদেশ কোন পথে?

বর্তমান রাজনৈতিক সংকট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে, তা নিয়ে জনমনে দুশ্চিন্তা বেড়েছে। সরকার কি জনগণকে সুরক্ষা দিতে পারবে? ভারত কি সত্যিই সামরিক হস্তক্ষেপ করবে? আর ড. ইউনুস কি পদত্যাগ করবেন, নাকি দেশকে আরও বড় অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেবেন?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে দ্রুত কূটনৈতিক সমাধান প্রয়োজন।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url