লাইভ ডাকাতি ?—গুলশানে এইচ টি ইমামের ছেলের শ্বশুরবাড়িতে হামলা!



রাজধানী গুলশানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের শ্বশুরবাড়িতে প্রকাশ্যে ডাকাতি, হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। মধ্যরাতে একদল দুর্বৃত্ত ‘ছাত্র জনতা’র নামে মিছিল নিয়ে আসে, বাসার গেট ভেঙে ফেলে এবং পাঁচতলায় উঠে পুরো বাড়ি তছনছ করে।
এই পুরো ঘটনা ঘটেছে টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে, সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে, সাক্ষাৎকারও দেওয়া হয়েছে—যেন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এক জ্বলন্ত উদাহরণ তৈরি হলো।

কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?

রাতের অন্ধকারে প্রায় ৫০ জনের একটি দল সাহাবুদ্দিন পার্কে জড়ো হয়।

মিছিল নিয়ে বাসার সামনে আসে এবং নিচের গেট ভেঙে ফেলে।

পাঁচতলায় উঠে দরজায় আঘাত করতে থাকে—অবশেষে জোরপূর্বক দরজা খুলতে বাধ্য করে।

পুরো বাড়ি লুটপাট ও তছনছ করে।


টেলিভিশনে সরাসরি লুটপাটের সম্প্রচার!

এই হামলা শুধু গোপনে ঘটেনি, বরং টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে। একজন সাংবাদিক অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ঘটনাটির ‘লাইভ ধারাবিবরণী’ দিয়েছেন—

“একটি স্যুটকেসের ভেতর আরেকটি স্যুটকেস!”

“দর্শক, আমরা দেখতে পাচ্ছি ছাত্র জনতা স্যুটকেস খুলে দেখছে।”

“একটি খালি আইফোনের বাক্স পাওয়া গেছে!”

“একজন মানুষের এতগুলো পোশাক কিভাবে হয়? ছাত্র জনতা প্রশ্ন তুলেছে।”


অর্থাৎ, গণতন্ত্রের নামে গৃহদখল ও লুটপাট এখন সরাসরি সম্প্রচারযোগ্য ‘সংবাদ’।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা?

এই পুরো ঘটনা চলেছে নির্বিঘ্নে, কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই। এতকিছু হয়ে যাওয়ার পর, অনেক দেরিতে পুলিশ আসলো—সাথে সেনাবাহিনীও!

এতে পুরনো বাংলা সিনেমার শেষ দৃশ্যের কথা মনে পড়ে—যেখানে সবকিছু শেষ হয়ে গেলে পুলিশ এসে বলে, “আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না!” তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু পুলিশ নয়, সেনাবাহিনীও এসে হাজির!

কাদের নেতৃত্বে চলল এই লুটপাট?

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী চালক দলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার সাহেব এই লুটপাটের নেতৃত্ব দেন।

সঙ্গে ছিলেন টোকাই নেতা রাজীব, যিনি পুলিশ আসার আগেই কৌশলে সটকে পড়েন।


সত্য-মিথ্যার খেলায় রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা?

হামলাকারীদের দাবি ছিল, “এইচ টি ইমাম পলাতক, তবে তার ছেলে তানভীর ইমাম এই বাসায় আছেন।”

কিন্তু বাস্তবতা হলো, এইচ টি ইমাম ২০২১ সালে মারা গেছেন, আর তানভীর ইমাম গ্রেফতার হয়েছেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে।

তাহলে তাদের কাছে এই ভুল তথ্য এল কোথা থেকে?


দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহতা

এখন প্রশ্ন—যে ৩০-৪০ জন দুর্বৃত্ত যেকোনো সময় যেকোনো বাসায় ঢুকে পড়তে পারে, লুটপাট চালাতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?

আরেকদিকে, সরকারের ‘বিশেষ প্রতিনিধি’ বিদেশি মিডিয়ায় বলছে, “দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একদম ঠিক আছে!”

আইনের শাসন ফিরে আসবে নাকি এই নতুন ‘লাইভ ডাকাতির সংস্কৃতি’ চালু থাকবে?—এমন প্রশ্ন এখন দেশের সাধারণ মানুষের মনে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url