বাংলাদেশে নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রকাশ্য মিছিল: জঙ্গিবাদের পুনরুত্থানের ইঙ্গিত?

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা | ৭ মার্চ ২০২৫

আজ শুক্রবার (৭ মার্চ) জুমার নামাজের পর রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সদস্যরা মিছিল বের করে। ‘মার্চ ফর খিলাফাহ’ নামে পরিচিত এই কর্মসূচি শুরুতে নির্বিঘ্নে চললেও, পল্টন থেকে বিজয়নগরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিলকারীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে একপর্যায়ে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে পুলিশের বাধা অতিক্রমের মাধ্যমে হিযবুত তাহরীরের সাম্প্রতিক এই মিছিল দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

জঙ্গিবাদের পুনরুত্থান?

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করলেও সংগঠনটি এখনও সক্রিয়। সাম্প্রতিক সময়ে তারা একাধিকবার প্রকাশ্যে তাদের কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করেছে। বিশেষ করে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে প্রকাশ্যে মিছিল আয়োজন তাদের সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাহমুদুল হাসান বলেন, “একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের প্রকাশ্যে এমন মিছিল অবশ্যই উদ্বেগজনক। এটি শুধু আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি নয়, বরং এটি জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের পুনরুত্থানের ইঙ্গিত হতে পারে। সরকারের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।”

বাংলাদেশ কি জঙ্গি রাষ্ট্রের পথে?

দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর পুনরায় সক্রিয় হওয়ার চেষ্টার ফলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, হিযবুত তাহরীরের মতো সংগঠনগুলোর উত্থান শুধু নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে ‘জঙ্গি রাষ্ট্র’ হিসেবে চিহ্নিত করার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

কর্তৃপক্ষের অবস্থান

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র বলেন, “আমরা এ ধরনের কোনো উগ্রপন্থী কার্যক্রম বরদাশত করব না। যারা এই মিছিলে অংশ নিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”

তবে এই ঘটনা স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিয়েছে যে, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর কার্যক্রম পুরোপুরি দমন করা সম্ভব হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের উচিত জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রম আরও জোরদার করা, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা যায় এবং বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখা সম্ভব হয়।

আপনার মতামত জানাতে আমাদের কমেন্ট সেকশনে লিখুন। আরও আপডেট পেতে সঙ্গে থাকুন Euro Bangla Khobor-এর সঙ্গে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url